ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট বিল পাস

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার ব্রেক্সিট বিল পাস করেছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। এতে যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পথ সুগম হলো। আজ মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

রাজকীয় অনুমোদন পেলে বিলটি আজই আইনে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরপর আক্ষরিকভাবে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে লিসবন চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫০ (আর্টিকেল ফিফটি) সক্রিয় করার লিখিত আবেদন জানাতে পারবেন। ইইউর প্রায় ৭০ বছরের ইতিহাসে যুক্তরাজ্যই প্রথম কোনো দেশ, যারা ২৮ দেশের এই জোট ত্যাগ করতে চায়।

ইইউ সদস্যপদ ত্যাগ করতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশকে লিসবন চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করার লিখিত আবেদন জানাতে হয়। এই অনুচ্ছেদে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলার প্রক্রিয়া বাতলে দেওয়া আছে। আবেদন পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচ্ছেদপ্রক্রিয়ার সমঝোতা শুরুর খসড়া তুলে ধরে একটি জবাব দেবে ইইউ। তবে মূল আলোচনা শুরু হতে কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। কারণ, জোটের দীর্ঘদিনের পুরোনো সম্পর্ক ত্যাগ করে নতুন সম্পর্ক গঠনের কৌশল নির্ধারণের কাজটি সময়সাপেক্ষ। তবে অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করার দুই বছরের মধ্যে সম্পর্ক গুটিয়ে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দিয়েছেন গত বছরই। এ প্রক্রিয়া ‘ব্রেক্সিট’ নামে বেশি পরিচিত। তবে বিষয়টি কার্যকর করা নিয়ে সরকারের প্রস্তুতি, বিচ্ছেদের প্রক্রিয়াসহ নানা বিষয়ে তুমুল মতবিরোধ জল ঘোলা করেছে অনেক। শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই শেষে বিষয়টি পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে গেলে সেখানেও আসে বাধা।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডস দুটি সংশোধনী চাওয়ায় ব্রেক্সিট বিল আটকে যায়। লর্ডসভার সদস্যরা এই বিলে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ইইউ নাগরিকদের বসবাস অব্যাহত থাকার নিশ্চয়তা এবং ব্রেক্সিট নিয়ে সম্পাদিত সমঝোতার ওপর গণভোটের দাবি করেন। সে কারণেই গতকাল সোমবার বিলটি নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ফেরত আসে। সেখানে বিলটি পাসের পর উচ্চকক্ষও এটি পাস করায় প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের জন্য ইইউ ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে আর কোনো বাধা রইল না।

তবে ডাউনিং স্ট্রিট সূত্র বলছে, এটি হয়তো এ সপ্তাহে হবে না। বিষয়টি ইইউকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে প্রধানমন্ত্রীকে হয়তো এ মাসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।

ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডাভিস বলেন, ‘ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে সরকারের যে সংকল্প, এর প্রতি পার্লামেন্ট সমর্থন জানিয়েছে। আমরা এখন আমাদের দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার দ্বারপ্রান্তে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *