টাইগারদের সামনে বাধা এখন চান্দিমাল
কলম্বো: শততম ম্যাচ নিয়ে সমর্থকদের চাওয়ায় বাড়তি চাপে ছিল বাংলাদেশ। সকালে শুরুতেই তার কিছুটা প্রকাশ করেছিলেন মোস্তাফিজ। টানা তিন ওভার মেডেন দিয়ে শুরু করেছিলেন তিনি। চা বিরতির পর অন্যরূপে হাজির টাইগাররা। কলম্বোর পি সারা ওভালে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরেছে বাংলাদশ। প্রথম দিনের শেষ সেশনে এসে বাধার প্রাচীর তৈরী করেছে দিনেশ চান্দিমাল। অধিনায়ক হেরাথ কে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
৩৫ রানে তিন উইকেট পড়ে যাবার পর ক্রিজে আসেন চান্দিমাল। বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে অন্যরা দিশেহারা হলেও চান্দিমাল দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন অসাধারণ দৃঢ়তায়।
৬ ব্যাটসম্যানের সঙ্গে জুটি গড়েন তিনি। এরমধ্যে মেন্ডিস ও থারাঙ্গার সঙ্গে ১১ রান করে।এরপর ৩৫ রানের জুটি গড়েন গুণারত্নের সঙ্গে। সবচেয়ে বড় জুটি গড়েন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে। পঞ্চম এ উইকেট জুটিতে আসে ৬৬ রান।
স্কোর বোর্ডে শ্রীলঙ্কার রান তখন ১৩৬। স্বাগতিকদের ২০০ রানের মধ্যে গুটিয়ে ফেলার স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই স্বপ্ন ফিকে করে দেন দিনেশ চান্দিমাল।
ধিরুয়ান পেরেরা দ্রুত ফিরে গেলেও অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গে মূল্যবান জুটি বেঁধেছেন চান্দিমাল। এ লেখা পর্যন্ত প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার রান ৭ উইকেটে ২৩৩। ৮৩ রানে ব্যাট করছিলেন চান্দিমাল। ১৫ রানে উইকেটে ছিলেন হেরাথ।
এর আগে সকালে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম সেশন শেষে স্কোরবোর্ডে চার উইকেট হারিয়ে ২৭.৪ ওভারে ৭০ রান তোলে লঙ্কানরা। দ্বিতীয় সেশনে মোস্তাফিজদের একমাত্র প্রাপ্তি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার উইকেট। দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৪ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৪৯।
কলম্বোর পি সারা ওভালে নবম ওভারের মাথায় ব্রেকথ্রু এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। মেহেদী হাসান মিরাজের তালুবন্দি হন দিমুথ করুনারাত্নে (৭)। ১২তম ওভারে কুশল মেন্ডিসকে (৫) স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে সতীর্থদের উদযাপনের মধ্যমনি বনে যান মিরাজ।
ওপেনার উপুল থারাঙ্গাকে (১১) সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন উঠতি স্পিন অলরাউন্ডার মিরাজ। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ২৮তম ওভারে আসিলা গুনারাত্নেকে (১৩) এলবিডব্লু করে উইকেটের খাতায় নাম লেখান পেসার শুভাশিস রায়। ৭০ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপের মুখেই পড়ে স্বাগতিক শিবির।
চান্দিমাল-ডি সিলভার ৬৬ রানের জুটি ভেঙে দ্বিতীয় সেশনে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদের জায়গায় একাদশে সুযোগ পাওয়া তাইজুল ইসলাম। তার স্পিন ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন একাদশে ফেরা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (৩৪)।
নিরোশান ডিকওয়েলাকে নিয়ে আরও ৪৪ রান যোগ করেন চান্দিমাল। ডি সিলভার সমান ৩৪ রান করে ফেরেন ডিকওয়েলা। তাকে ক্লিন বোল্ড করে উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান।
গল টেস্টে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ২৫৯ রানে হার মানতে হয়। সেই হতাশা ভুলে টাইগারদের সামনে দুই ম্যাচ সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ। মাইলফলকের ম্যাচে সেরা একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে টিম বাংলাদেশ। মোট চারটি পরিবর্তন এসেছে। ফর্মহীনতায় বাদ পড়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মুমিনুল হকও দলের বাইরে।
পেসার শুভাশিস রায়ের একাদশে থাকা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও বাদ পড়েছেন তাসকিন আহমেদ। তার জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এদিকে, আবারো উইকেটকিপিং গ্লাভস হাতে নিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। নেটে ব্যাটিং অনুশীলনের সময় পাঁজরে বলের আঘাতে ছিটকে গেছেন লিটন দাস।
লিটনের ইনজুরির সুবাদে ঐতিহাসিক ম্যাচ দিয়ে টেস্ট অভিষেক হচ্ছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। মুমিনুল ও মাহমুদউল্লাহর জায়গায় ফিটনেস সমস্যা কাটিয়ে দলে ফেরা ইমরুল কায়েস ও গল টেস্টে সুযোগ না পাওয়া সাব্বির রহমান।
লঙ্কান একাদশে বাড়তি ব্যাটসম্যান হিসেবে যুক্ত হয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। বাদ পড়েছেন পেসার লাহিরু কুমারা।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শুভাশিস রায়, মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দিমুথ করুনারাত্নে, উপুল থারাঙ্গা, কুশল মেন্ডিস, দিনেশ চান্দিমাল, অসিলা গুনারাত্নে, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, নিরোশান ডিকওয়েলা (উইকেটরক্ষক), দিলরুয়ান পেরেরা, রঙ্গনা হেরাথ (অধিনায়ক), সুরাঙ্গা লাকমল, লক্ষণ সান্দাকান।